বিআরটিএ (BRTA) অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স, ধাপে ধাপে আবেদন, ফি পরিশোধ, লার্নার লাইসেন্স, ড্রাইভিং টেস্ট, বায়োমেট্রিক ও স্মার্ট কার্ড ডেলিভারি ২০২৫ সালের নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশে একটি বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতাই নয়, বরং নিরাপদ ও সচেতন সড়ক ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি প্রথমবারের মতো ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চান, তাহলে ভালো খবর হলো—এখন আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে কিংবা অফিসে বারবার যেতে হয় না। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) তাদের সেবা পুরোপুরি অনলাইনে রূপান্তর করেছে। এই ব্লগে আমরা ধাপে ধাপে দেখাবো ২০২৫ সালে কীভাবে আপনি বিআরটিএ অনলাইন সার্ভিস পোর্টাল ব্যবহার করে ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে পারেন।
কেন আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে?
এটি আইনের বাধ্যবাধকতা (মোটর যান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ অনুযায়ী) বৈধ লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে জরিমানা ও শাস্তি হতে পারে
গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ইন্স্যুরেন্স ও ইত্যাদি পরিষেবার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূল, কদুর্ঘটনায় পড়লে ক্ষতিপূরণ দাবি ও আইনি সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়
বিআরটিএ’র অনলাইন লাইসেন্স সিস্টেম সম্পর্কে
বিআরটিএ ২০২৩ সাল থেকে একটি আধুনিক BRTA Service Portal (bsp.brta.gov.bd) চালু করেছে, যার মাধ্যমে লার্নার লাইসেন্স থেকে শুরু করে ড্রাইভিং টেস্ট এবং স্মার্ট কার্ড ডেলিভারি পর্যন্ত সবকিছু অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়।
নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে যা যা করতে হবে (Step by Step Guide)
ধাপ ১: BRTA সার্ভিস পোর্টালে নিবন্ধন
- পোর্টালে যান: https://bsp.brta.gov.bd
- আপনার নাম, মোবাইল নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) যাচাইয়ের পর আপনার প্রোফাইল একটিভ হবে।
ধাপ ২: অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ
BRTA পোর্টালে লগইন করে "New Driving License" অপশন সিলেক্ট করুন এবং নিচের তথ্যগুলো দিন:
- ব্যক্তিগত তথ্য (NID অনুযায়ী)ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা
- রক্তের গ্রুপ
- লাইসেন্স ক্লাস (যেমন: মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ইত্যাদি)
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড (ছবি, NID স্ক্যান, প্রমাণপত্র)
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- শিক্ষানবীস লাইসেন্স
- প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট
- ফি পরিশোধের রসিদ
ধাপ ৩: ফি পরিশোধ (ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত ফি - BRTA )
বিআরটিএ নির্ধারিত ফি অনলাইনে বিকাশ, নগদ, রকেট, কিংবা ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন। বর্তমানে (২০২৫ অনুযায়ী) নিচের ধরণের ফি প্রযোজ্য:
- সেবা ফি (টাকা)লার্নার লাইসেন্স- ৩৪৫ টাকা
- লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা- ৪৪৫ টাকা
- চূড়ান্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স- ২,৫০০ টাকা (স্মার্ট কার্ড সহ)
পরিশোধ করার পর আপনি একটি পেমেন্ট রিসিট পাবেন এবং আবেদন সফলভাবে জমা হবে।
ধাপ ৪: লার্নার লাইসেন্স ডাউনলোড
- আবেদন জমা দেওয়ার পর BRTA আপনাকে একটি লার্নার লাইসেন্স ইস্যু করবে।
- এটি ই-লাইসেন্স আকারে পোর্টাল থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
- এই লাইসেন্সে সাধারণত ২-৩ মাসের মেয়াদ থাকে, যার মধ্যে আপনাকে ড্রাইভিং টেস্ট দিতে হয়।
ধাপ ৫: পরীক্ষার জন্য তারিখ নির্ধারণ
- BRTA পোর্টাল থেকে আপনার পছন্দের পরীক্ষাকেন্দ্র এবং তারিখ নির্বাচন করতে পারবেন।
- নির্ধারিত তারিখে আপনাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে।
ধাপ ৬: বায়োএনরোলমেন্ট ও পরীক্ষা
পরীক্ষার দিন আপনি যা করবেন:
- ছবি তোলা (লাইসেন্সের জন্য ব্যবহার হবে)
- আঙুলের ছাপ ও ডিজিটাল স্বাক্ষর
- লিখিত পরীক্ষা (সাধারণত বহুনির্বাচনী প্রশ্ন – সড়কচিহ্ন, নিয়ম-কানুন ইত্যাদি)
- ব্যবহারিক পরীক্ষা (গাড়ি চালানোর দক্ষতা যাচাই)
পরামর্শ: বিআরটিএ অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে দেওয়া পরীক্ষার সিলেবাস অনুসরণ করে অনুশীলন করুন।
ধাপ ৭: ফলাফল ও ই-লাইসেন্স
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে:
- BRTA পোর্টালে লগইন করে আপনি আপনার ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করতে পারবেন
এটি একটি অস্থায়ী ডকুমেন্ট যা স্মার্ট কার্ড না পাওয়া পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়।
ধাপ ৮: স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স প্রিন্ট ও ডেলিভারি
- BRTA যখন আপনার স্মার্ট কার্ড তৈরি করবে, তখন সেটি ডাক বিভাগের মাধ্যমে আপনার ঠিকানায় পাঠানো হবে।
- আপনি অনলাইনে ট্র্যাকিং নম্বর ব্যবহার করে স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন। এটি সাধারণত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে পাঠানো হয়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সুবিধা
- সরকারি ও বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে লাইসেন্স একটি প্রমাণপত্র
- রেন্ট-এ-কার কিংবা গাড়ি কিনতে গেলে প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে
- বিদেশে বৈধভাবে আন্তর্জাতিক লাইসেন্স পেতে সাহায্য করে
- আইনি সুরক্ষা দেয় দুর্ঘটনা বা ট্র্যাফিক কেসে
গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ
সবসময় নির্ভুল তথ্য দিন — NID অনুযায়ী মিল থাকা আবশ্যকনির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফি প্রদান ও পরীক্ষার জন্য বুকিং করুনBRTA অফিসের সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া যোগাযোগ না করাই ভালো — অনলাইনেই সব দেখা সম্ভবলাইসেন্স ব্যবহার ও গাড়ি চালানোর সময় সাথে রাখুন
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে এখন আর দিনের পর দিন অফিসে ঘুরতে হয় না। বিআরটিএ এর অনলাইন পোর্টাল পুরো প্রক্রিয়াকে সহজ, স্বচ্ছ এবং দ্রুত করেছে। আপনি চাইলে পুরো আবেদন থেকে শুরু করে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ পর্যন্ত একটি দিন ছাড়া বাকি সব কিছুই ঘরে বসেই করতে পারবেন।
আজই bsp.brta.gov.bd তে গিয়ে আপনার লাইসেন্স আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করুন এবং আইনগতভাবে সড়কে চলাফেরার প্রস্তুতি নিন।
FAQ – সাধারণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে ২০২৫ সালে ?
উত্তর: লার্নার লাইসেন্স ৩৪৫ টাকা, টেস্ট ফি ৪৪৫ টাকা, স্মার্ট কার্ড সহ ড্রাইভিং লাইসেন্স ২,৫০০ টাকা।
প্রশ্ন: ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কোন কোন কাগজপত্র লাগবে?
উত্তর: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), ছবি, শিক্ষানবীস লাইসেন্স, প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট ও ফি রসিদ।
প্রশ্ন: BRTA অনলাইন পোর্টালে কীভাবে আবেদন করতে হয়?
উত্তর: bsp.brta.gov.bd এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
প্রশ্ন: ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কত সময় লাগে?
উত্তর: সাধারণত ২-৩ মাসের মধ্যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে স্মার্ট কার্ড ডেলিভারি হয়।
প্রশ্ন: অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার নিয়ম কী?
উত্তর: RTA পোর্টালে লগইন করে “Driving License Status” অপশন থেকে চেক করা যায়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার পূর্বে ড্রাইভিং শেখার প্রয়োজনীয়তা
ড্রাইভিং লাইসেন্স শুধু একটি কাগজ নয়, এটি একজন সচেতন ও দক্ষ চালকের স্বীকৃতি। তবে এই স্বীকৃতি পাওয়ার আগে প্রয়োজন যথাযথ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ। ড্রাইভিং শেখা শুধুমাত্র গাড়ি চালানো নয়, বরং এটি একটি দায়িত্বশীলতা অর্জনের প্রক্রিয়া। লাইসেন্স নেওয়ার আগে সঠিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে যেমন নিজেকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা যায়, তেমনি অন্যদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ট্রাফিক আইন, সড়কচিহ্ন, সিগন্যাল এবং জরুরি পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়। অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ চালকের অজ্ঞতা ও অসাবধানতা—যা সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহজেই দূর করা সম্ভব।
২০২৫ সালে ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া যতই সহজ হোক না কেন, দক্ষতা অর্জন ছাড়া এটি শুধুমাত্র একটি আইনি বৈধতা হয়ে দাঁড়াবে—একজন নিরাপদ চালকের প্রতিচ্ছবি নয়।
এখানেই Pathway Driving Training School-এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। বিআরটিএ অনুমোদিত এই প্রতিষ্ঠানটি অভিজ্ঞ ও পেশাদার প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে ড্রাইভিং শেখার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে নিরাপদ ও প্রাতিষ্ঠানিক করে তুলেছে। এখানে আপনি পাবেন:
থিওরি ও প্র্যাকটিকাল উভয় ধরণের ট্রেনিং
সড়ক নিরাপত্তা ও জরুরি করণীয় বিষয়ক গাইডলাইন

Download Driving Training Guidebook pdf
পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি
বিশেষ করে, Pathway Driving Training School ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে আগ্রহীদের জন্য Model Test সহকারে সহায়তা করে, যাতে আপনি পরীক্ষায় সহজেই উত্তীর্ণ হতে পারেন।
আপনি যদি ড্রাইভিং শেখার মাধ্যমে নিজের ও অন্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান, তাহলে আজই এনরোল করুন Pathway Driving Training School-এর ড্রাইভিং কোর্সে।
ভিজিট করুন: www.pdts.com.bd আরও জানতে: Mobile: +8801321232982